নিয়াজ মাহমুদ সাকিব
যুক্তরাষ্ট্রকে মোড়ল রাষ্ট্র হিসেবে কে না চেনে বর্তমান বিশ্বে। এর কাজই হলো এখানে সেখানে গিয়ে নিজের স্বার্থোদ্ধারে অযাচিত হস্তক্ষেপ করে আসা। বর্তমান বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের মোড়লগিরিতে ভাগ বসাতে আসা রাষ্ট্র ইন্দোচীনে পঞ্চাশের দশকে সমাজতন্ত্রীরা একের পর এক রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসছিলো, তখনই পুঁজিবাদী যুক্তরাষ্ট্র সমাজতন্ত্রীদের এই রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে বিজয়গাঁথা রচনার কাব্যরথ থামাতে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে প্রচার করে ডমিনো তত্ত্ব। আর এই প্রচারের পেছনের উদ্দেশ্য ছিল সামরিক হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করা।
প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি আইজেনআওয়ার সর্বপ্রথম ১৯৫৪ সালে কোনো একটা সংবাদ সম্মেলনে ‘ডমিনো থিওরি’ টার্মটা সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন।
ডমিনো তত্ত্বকে যদি গুছিয়ে এনে এক লাইনের বিশুদ্ধ সারসংক্ষেপ করা যায়, তবে এমন দাঁড়াবে যে, কোনো একটি রাষ্ট্রক্ষমতায় যদি সমাজতন্ত্রীরা ক্ষমতার সিংহাসনে বসে তবে সেই রাষ্ট্রের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোও ধীরে ধীরে সমাজতন্ত্রকে আঁকড়ে ধরতে চাইবে। ফলত, সমাজতন্ত্র আসন গেড়ে পাকাপোক্ত হয়ে বসে যাবে। যা যুক্তরাষ্ট্রের মতো পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ালেও দাঁড়াতে পারে কোনো এক কালে।
অনেকগুলো তাস যদি পাশাপাশি গায়ে গায়ে মিশিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা যায়, তবে একটাকে আলতো করে একটা টোকা দিলে এক এক করে পাশের মিশে থাকা তাসগুলোও পড়ে যাবে। ডমিনো তত্ত্বের মূল কথাও এটাই।
অর্থ পরিষ্কার, ঠিক স্বচ্ছ জলের মতোন,
“সমাজতন্ত্রের পায়ে তালা লাগাও!”
তত্ত্ব তো তত্ত্ব বটে! প্রয়োগের ক্ষেত্র ও প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, ১৯৫৫ তে শুরু হওয়া দীর্ঘ বিশ বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী ভিয়েতনাম যুদ্ধে এবং স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োগ করেছিলো তাঁদের এই রিপল এফেক্ট ফ্লিপাক্রট কৌশলগতো মোক্ষম অস্ত্র “ডমিনো তত্ত্ব”।ভিন্ন ভাষায় যে তত্ত্বকে বলা হয় , “সাম্যবাদের প্রভাব তত্ত্ব”। ১৯৫০ এর দশক থেকে ৮০’র দশক পর্যন্ত বিশিষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ (যদিও নেতিবাচক) একটি তত্ত্ব ছিল এটি।তাস খেলাটাকে তো ডোমিনো খেলাও বলা হয় মাঝে মাঝে।
এই তত্ত্বের সূত্র ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়ে যুদ্ধে, যেহেতু তাঁদের উদ্দেশ্যই ছিল যুদ্ধ, ঢুকে পড়া একটা অঞ্চলে অযাচিতভাবে, সেহেতু এই যুদ্ধ হওয়াটাই তো স্বাভাবিক ছিল বৈকি! যদিও কোনো কোনো আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক সাইড কাটেন এই বলে যে, এই যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি কোনো স্বার্থ ছিলনা এবং এই যুদ্ধে পরাজয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুনাম ও শক্তিতে বড়সড় আঘাত হেনেছিলো।
কেউ কেউ যুক্তি দেয় যে, ডোমিনো তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে আসলে এশিয়ায় কমিউনিস্টদের জয়জয়কারের বিরুদ্ধে জনসাধারণকে উসকে দেয়া গেছে। ভিয়েতনাম যুদ্ধের পরে কমিউনিস্ট রাষ্ট্রগুলি ইন্দোচীনের বলয়েই সীমাবদ্ধ ছিল এবং কমিউনিজম থাইল্যান্ডে এবং অন্যান্য পুঁজিবাদী সরকারগুলোর উত্থানে মারাত্মক প্রভাব বিস্তারকারী হুমকির কোনো কারন হয়ে উঠতে পারেনি।
তত্ত্বের আরেকটি সমালোচনা হলো, এটি ১৯৭০ এর দশকে গড়ে ওঠা বিভিন্ন কমিউনিস্ট আন্দোলন এবং রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অসামঞ্জস্যতা, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ইত্যাদি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে কুলাতে পারেনি , যেমন- চীন আর সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে অসখ্যতা, চীন এবং ভিয়েতনামের অন্ত কলহ, এবং ভিয়েতনামের সাথে খমের রুজের সাথে সম্পর্ক অবনতির দিকে যাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।
আরেকটি যুক্তি হ’ল মার্কিন সরকারের ডোমিনো তত্ত্ব ভিয়েত মিনের উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার যুদ্ধকে মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়না। যদিও ইন্দোচীনের যুদ্ধের সময় এই দলটার প্রতিই ভিয়েতনামি জনগণের অকুন্ঠ সমর্থন ছিল।
কারও মতে,অন্যান্য দেশগুলোতে আমেরিকান প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে ডমিনো তত্ত্ব ছিল “নব্য উপনিবেশবাদের” ছদ্মবেশ তথা আমেরিকান উপনিবেশের প্রভাব বলয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ওপেন সিক্রেটের মতো করে এক একটা রাষ্ট্রকে ঢোকানো এবং এ তত্ত্ব কেবল নব্য উপনিবেশবাদের অনুপ্রেরণা বৈ কিছুই নয়। ।
ডমিনো তত্ত্বের মতো স্নায়ূযুদ্ধের তত্ত্বীয় উপাদানগুলোই আমেরিকান সরকারের জন্য হয়ে গেলো সবথেকে বড় ভয়ানক প্রোপাগান্ডা টুল আমেরিকান জনগণের মধ্যে ভিয়েতনাম তথা ভিয়েতনাম সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে ভয়ের সঞ্চার করতে এবং এই তত্ত্ব দিয়েই আমেরিকার জনগণের সমর্থন আদায় করে নেয় আমেরিকান সরকার ভিয়েতনাম যুদ্ধে পয়সা কড়ি- সমস্ত বিনিয়োগের জন্য।
বসন্তকাল, ১৯৯৫, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রতিরক্ষা সচিব রবার্ট ম্যাকনামারা বলে বসলেন যে, তাঁর বিশ্বাস ডোমিনো তত্ত্বটি এক প্রকারের ভুল কিছু ছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিদেশী ভিয়েতনামি প্রফেসর ট্রান চুং এনগোক বলেছেন: “আমেরিকার ক্ষতি করতে পারে এমন কিছু করার সামর্থ্য নেই যে ছোট, দরিদ্র, অনুন্নত দেশ ভিয়েতনামের, সে দেশে মার্কিনীদের হস্তক্ষেপের যুক্তিযুক্ত কোনো কারন আসলে নেই। সুতরাং, জনমত এবং আন্তর্জাতিক আইন নির্বিশেষে ভিয়েতনামে মার্কিন হস্তক্ষেপ “ন্যায্যতার উপর কোদাল মারা, ক্ষমতা প্রয়োগ করা”, আমেরিকা যেভাবে চায়্ নিজেরাই নিজেদের মতো যে কোনও জায়গায় হস্তক্ষেপ করে যাচ্ছে , যেন হস্তক্ষেপ করা তাঁর অধিকার । ”
ডোমিনো তত্ত্ব আমেরিকানদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে, হৃদয়ে বড় গভীর ক্ষত বসিয়ে দেয়। এই তত্ত্বের কারণে, মার্কিন সরকার চরম নীতি চালু করেছে, যা জনগণের মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দেয়। উগ্র কমিউনিস্ট বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং ইউএস সিক্রেট সার্ভিস নিয়মিতভাবে কম্যুনিস্ট বিরোধী প্রচারণা চালায় যার মধ্যে “সন্দেহভাজন কমিউনিস্ট” বা কমিউনিজম সমর্থন করার অজুহাতে বহু লোককে গ্রেপ্তার, বৈষম্যমূলকভাবে গুলি চালানো, মামলা করা এবং গ্রেপ্তার করার মতো প্রচুর ঘটনা রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থদের বেশিরভাগই মার্কিন সরকারকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারতো এবং এমন সম্ভাবনাই বেশি ছিল তবুও কমিউনিস্টদের সাথে তাদের জড়িত হওয়াটা সম্ভব না। হয়তো নিজেরা নিজেদের ক্ষতি করতে পারতো তাঁরা তবু ও বাইরের কারো সাথে কাজ করার মনস্তত্ত্বই হয়তো তাঁদের হয়ে ওঠেনি।১৯৪৫ এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত বলয়ের প্রভাব পড়তে শুরু করে ইউরোপীয় বলয়ে। ইরান সংকটের সময় ট্রুম্যান ঘোষণা করে ট্রুম্যান ডকট্রিন, গ্রীস আর তুর্কিকে সাহায্য পাঠানো হবে ঘোষণা আসে, বাফার জোন ও সংশ্লিষ্ট হয়ে যায়। রাজনীতি নিয়ে উক্তি
১৯৪৯ এ তৎকালীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টি প্রধান মাও সেতুং চীনের ক্ষমতায় বসেন । এরপর নানাবিধ কাজ কর্ম ঘটে। ১৯৫৪ তে ভিয়েত মিন , একজন ভিয়তেনামি জাতীয়তাবাদী সেনানী , একই সাথে কমিউনিস্ট, ফ্রেঞ্চদেরকে হারিয়ে দেয় যুদ্ধে। ফলত অত্র অঞ্চল থেকেই উৎখাত হয়ে যায় ফরাসিরা। অঞ্চলটা পরিচিতি পায় ফ্রেঞ্চ ইন্দোচীন নামে। কোরিয়া প্রেক্ষাপটে আসে, সেখানেও উল্লেখযোগ্য কিছু ব্যাপার আছে। কোরিয়ান যুদ্ধে মাও সেতুং সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষ শক্তি ছিলেন এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছিলেন সবচেয়ে শক্তিশালী কমিউনিস্ট বিরোধী শক্তি।
এমন সময়ে যখন চীনা কমিউনিস্ট শাসন ব্যবস্থা তার নিজস্ব শক্তি সুসংহত করছিল তখন হাতে নেওয়া হয়েছিল চীনা গৃহযুদ্ধ ।যদিও চীন সেখানেও জিতে গেছে।
ডোমিনো তত্ত্বের প্রস্তাব দেওয়া প্রথম ব্যক্তিত্ব ছিলেন ১৯৪০ এর দশকে রাষ্ট্রপতি হ্যারি এস ট্রুমান, যেখানে তিনি “গ্রীস এবং তুরস্কে সামরিক সহায়তা প্রেরণকে ন্যায়সঙ্গত করার জন্য” এই তত্ত্বটি চালু করেছিলেন। তবে সরাসরি এই টার্ম এর প্রবক্তা আইজেনআওয়ার।” ১৯৬০ এর দশকে কেনেডি এবং জনসন প্রশাসনের ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকান সামরিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির ন্যায্যতা অর্জনের অন্যতম মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিলো এ ডমিনো তত্ত্ব।”
প্রফেসর চমস্কির কথায় গুরুত্ব না দিয়ে উপায় কই, ভাষাবিদ এবং রাজনৈতিক তাত্ত্বিক নোয়াম চমস্কি লিখেছেন যে তিনি বিশ্বাস করেন যে ডোমিনো তত্ত্ব মোটামুটি সঠিক, যদিও তিনি এই হুমকির প্রতি আরও ইতিবাচক ব্যাখ্যা রেখেছিলেন, তবে তিনি লিখেছেন যে কমিউনিস্ট এবং সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন দরিদ্র দেশগুলিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কারণ তারা সেসব দেশে অর্থনৈতিক উন্নতি নিয়ে এসেছিল। তারা ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। উন্নতিও করেছে।
এই কারণেই তিনি আরো লিখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিলি, ভিয়েতনাম, নিকারাগুয়া, লাওস, গ্রেনাডা, এল সালভাদোর, গুয়াতেমালা প্রভৃতি তথাকথিত “জনগণের আন্দোলন” দমনে এত প্রচেষ্টা করেছে। “দুর্বল ও দরিদ্র একটি দেশ,এটা তো দমন পীড়নের চাক্ষুষ উদাহরণ। গ্র্যানাডার মতো ক্ষুদ্র, দরিদ্র দেশ যদি তার জনগণের জন্য আরও ভাল জীবন বয়ে আনতে সফল হতে পারে তবে আরও কিছু সংস্থান রয়েছে যেখানে আরও সম্পদ রয়েছে ! সেখানে যেতে সমস্যা কি ছিল? সে সম্পদগুলো তো নিজেরা নিজেরা আফসোস করছে, আহারে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদেরকে কেন নিচ্ছে না!!? চমস্কি এই ব্যাপারটা উল্লেখ করেছেন এভাবে ” উজ্জ্বল উদাহরণের হুমকি”।
ডোমিনো তত্ত্বটি তাৎপর্যপূর্ণ কারন এটি জোটের গুরুত্ব ফুটিয়ে তোলে (দুর্বৃত্ত জোট থেকে বৈধ দ্বিপক্ষীয় জোটে পরিবর্তিত হবার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে)। ডোমিনো তত্ত্বটি কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চল তথা দেশের অন্যান্য দেশের সাথে জোটবদ্ধ হবার উদ্দেশ্য ও কারন মূল্যায়নে সাহায্য করে।যদিও উদ্দেশ্য এবং কৌশল প্রতিটি দেশের ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।ভিক্টর চ যুক্তরাষ্ট্র এবং পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে একটি অসাম্প্রদায়িক দ্বিপক্ষীয় জোটকে কৌশলগত পন্থা হিসাবে চিত্রায়িত করেছেন, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের যূথবদ্ধ ও স্থিতিশীল রাখার জন্য সর্বদা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ।
আমেরিকা কীভাবে প্রজাতন্ত্রের কোরিয়া, চীন এবং জাপানের সাথে অসামান্য দ্বিপক্ষীয় বিপরীত প্রতিপক্ষ জোট তৈরি করেছিলো তা বিবেচনার বিষয় এবং সে ‘দুর্বৃত্তায়িত জোটকে এক সুতোয় গেঁথে’ রোমাঞ্চের আচরণে মিষ্টি মধুর খেলা খেলতে থাকে, তলে তলে বাধা দেয় যা আরও বৃহত্তর সামরিক সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যেতে পারে পুরো একটা অঞ্চলকে কিংবা সূত্রপাত ঘটাতে পারে আবার ডোমিনো প্রভাবের। এটি এশীয় দেশগুলি কমিউনিজমে পতিত হওয়ার সাথে সাথে। যেহেতু” দুর্বৃত্ত জোটের ডমিনোসকে (প্রভাব বলয়-চীনা বলয়) পতনের হুমকি দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেশ ভয়ঙ্কর একটা পরিবেশের দৃশ্যপট এর স্ক্রিনিং করেছিলো ডোমিনো তত্ত্ব আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় জোটের গুরুত্বকে আরও গুরুত্ববহ করে তোলে। এটা স্পষ্ট যে, ডমিনো তত্ত্বটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে কিছু না হলেও অন্তত জোটবদ্ধ হবার গুরুত্ব বুঝিয়েছিলো এবং মারকিনীরা সে গুরুত্ব উপলব্ধি করে তাঁদের স্বার্থ উদ্ধারের ক্ষেত্রে নতুন ধারার দিগন্ত ও উন্মোচিত করেছিলো। ফলাফল, তাইওয়ান , দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের সাথে তাঁদের সখ্যতা । বিশেষ করে, শক্তি প্রয়োগ, রাজনৈতিক নির্ভরতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাঁদের শক্ত , গভীর দ্বিপাক্ষিক জোট।
সুতরাং, ডমিনো তত্ত্ব হচ্ছে একটা ছুপা তত্ত্ব, আন্তর্জাতিক সম্পর্কে একটি নব দিগন্ত , বাঁক বদল এবং স্বার্থ রক্ষার পন্থায় ইতবাচক পরিবর্তনের সূচনাকারী তত্ত্ব। যে তত্ত্বের মাধ্যমে লুকিয়ে লুকিয়ে আপনি প্রতিপক্ষ জোটের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
ডোমিনো তত্ত্ব এবং ছুপা ছুপা নির্ভরতার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক তো আছেই বটে। কম্যুনিজমে আচ্ছন্ন একটি দেশের অমরাবতীর পতন কেবলমাত্র অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর উপরেই বিরূপ প্রভাব ফেলেনা শুধু তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ, বর্তমানের এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোনো রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ এবং দক্ষতার উপরও এর প্রভাব পড়ে। মনে আছেনা ওই রিপল এফেক্ট?
অতএব, ডোমিনো তত্ত্বটি একটি উল্লেখযোগ্য তত্ত্ব যা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কারন (প্রয়োগ) এবং বড় বড় -ফলাফলের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে কাজ করে, এবং নিশ্চিত করে যে এই জাতীয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র-পরিণতি- ঘাত অভিঘাত দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব বিস্তারে এবং পরিণতি নিশ্চিতে সক্ষম।