নিয়াজ মাহমুদ সাকিবঃ জুনের রৌদ্রোজ্জ্বল আভায় আলোকিত মিষ্টি সকাল, অন্য সবার মতো বিলিয়নার জিম ইরশেও এসে উপস্থিত হলেন নিলাম আড্ডায় এবং বিচার বিবেচনায় খানিকটা সময় নিয়েই জানিয়ে দিলেন তাঁর সিদ্ধান্তের কথা। ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করার সিদ্ধান্তের কথা, তাও শুধুমাত্র একটা গীটারের জন্য। বিড করলেন এবং জিতে নিলেন আরাধ্য ইলেকট্রিক গীটার।
ডেভিড গিলমোরের ব্যবহৃত ১৯৬৯ এর একটি ব্ল্যাক ফেন্ডার স্ট্রেটোকাস্টার এখন বিলিয়নার ইরশের হাতে।
ডেভিড গিলমোর, যিনি ১৯৬৭ সাল থেকেই ব্যান্ডদল পিংক ফ্লয়েডের একজন সদস্য ছিলেন, “দ্যা ডার্ক সাইড অফ দ্যা মুন”(চাঁদের আঁধার), “উইশ ইউ ওয়্যার হিয়ার (যদি তুমি আজ থাকতে)”, “অ্যানিমালস (প্রাণী)” এবং ” দ্যা ওয়াল (দেওয়াল)” এর মতো জনপ্রিয় অ্যালবামগুলির রেকর্ডিংয়ে ব্যবহার করেছিলেন নিলামে ওঠা বর্তমানে ইরশের মালিকানাধীন এই গীটারটি!
তবে ওই একমাত্র স্ট্রেটোকাস্টারই যে কিনেছিলেন ইরশে তার পুরো জীবনে, তা নয়, ওই একই নিলাম থেকেই ইরশে আরো যা কিনেছিলেন তাঁর মধ্যে উল্লেখযোগ্য তাঁর ক্রয়কৃত গীটারটি বহন করার জন্য একটি ট্রাভেল কেস যার মূল্যমান ১ লাখ ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার এবং ১৯৬৯ এরই ১.০৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যমানের একটি মার্টিন ডি -৩৫ অ্যাকাউস্টিক গিটার।
অকশন হাউজ ক্রিস্টি কর্তৃপক্ষের ধারণা ছিলো যে, ওই কালো স্ট্র্যাটোকাস্টার টা এক লাখ থেকে দেড় লাখ মার্কিন ডলারের মাঝামাঝি কোনো একটা দামে বিক্রি হয়ে যেতে পারে। কিন্তু সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগের সবগুলো রেকর্ড ভেঙ্গে রেকর্ড ৩.৯৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দামেই (গীটারটিতে লাগানো আকাশচুম্বী প্রাইস ট্যাগ) বিক্রি হয়েছে। উল্লেখিত, পূর্বের সর্বোচ্চ দামে বিক্রিত গীটারটির মূল্য ছিল ২.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সুরের মূর্ছনার মাদকতায় আচ্ছন্ন করতো যে রক কিংবদন্তী হরহামেশাই, ডেভিড গিলমোর, কম করে হলেও ১২০ টির বেশি গীটার ,অ্যামপ্লিফায়ার (ধ্বনি সম্প্রসারক যন্ত্রবিশেষ) আর ট্র্যাভেল কেস বিক্রি করেছিলেন। তিনি সম্প্রতি এক ঘোষণায় বলেছেন যে, বিভিন্ন নিলাম থেকে প্রাপ্ত সমস্ত আয় দান করে দেয়া হবে “ ক্লায়েন্ট আর্থ” নামক একটি পরিবেশ বিষয়ক আইন সংস্থাকে, যারা বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের ঘোষিত এক মিশনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
গীটারটা হাতে পাবার পরে, সে জিম ইরশের সুখ আর দেখে কে !যেন পরিপূর্ণ পরিতৃপ্তি! সে যাই হোক, কোনো বিখ্যাত কিংবা কিংবদন্তীসম কোনো রক তারকার কোনো বাদ্যযন্ত্র ইরশের হাতে এবারই প্রথম ,এমন কিছু তো নয়! এর আগেও বহুবার বহু কিংবদন্তীর বিভিন্ন গীটার সহ নানা বাদ্যযন্ত্র ইরশের কাছে গেছে! তবুও এবার কেমনই যেন ইরশের চোখে মুখে আনন্দের বিহ্বলতায় হারিয়ে যাবার ছাপ!
তার মূল্যবান সংগ্রহগুলোর মধ্যে জন লেনন, প্রিন্স এবং রিংগো স্টারের মতো খ্যাতিমান তারকা কিংবদন্তীদের বাদ্যযন্ত্র ও রয়েছে।
“প্লে ইট লাউড: ইনস্ট্রুমেন্টস অফ রক অ্যান্ড রোল” শীর্ষক একটি প্রদর্শনীর অংশ হিসাবে ইরশের সংগৃহীত এই আইটেমগুলো নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টে প্রদর্শিত হয়েছিল।