বাংলাকোষ ডেস্কঃ লজ্জায় নারীর সৌন্দর্য, নারীর অলংকার।নারীর লজ্জার মোহতায় ডুব দিয়েছেন কবি সাহিত্যকেরা, গেথেছেন শব্দের মালা, রচনা করেছেন গান, কবিতা। ওই ভাবুক কবির কাব্য, শিল্পীর সুনিপুণ হস্ত জোড়া অথবা প্রণয়ীর বাঁশির সুর সাক্ষ্য দেয় নারীর সু কোমল লজ্জার মাধূর্যতা। লজ্জা যে শুধুই নারীর তা নয়। এক বিশেষ শ্রেণীর লজ্জাবতী গাছের কথাও জানা যায়।
যে গাছের রয়েছে নজর কাড়া সৌন্দর্য যার ভাজে ভাজে লুকিয়ে বিস্তর লজ্জা। লজ্জাবতী একটি ছোট গুলজাতীয় উদ্ভিদ, এর সবুজ পাতার কলাহোল এড়িয়ে মাথাচাড়া দিয়ে ফোটে হালকা বেগুনি রাঙা লজ্জাবতীর ফুল।
লজ্জাবতীর রয়েছে এক গুচ্ছ ছোট পত্রক। যে গুলো আলোতে খুলে যায় এবং অন্ধকারে বন্ধ হয়ে যায়। এর পাশাপাশি এর পাতায় কিছুর স্পর্শ লাগলে পত্রকগুলো বন্ধ হয়ে যায়। তবে কি অন্ধকারে লজ্জা পাই বিশেষ শ্রেণির এই লজ্জাবতী গাছ? গাছেদেরও কি অনুভূতি আছে? জগদীশ চন্দ্র বসুর কি বলা উচিত ছিলো গাছেদের অনুভূতি আছে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুজেছেন বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা।
লজ্জাবতীর পাতার গোড়া একটু ফোলা থাকে। এর ভেতরে থাকে অনেকগুলো বড় বড় কোষ। এই কোষগুলো যখন পানিভর্তি হয়ে ফুলে ওঠে তখন লজ্জাবতী পাতার ডাঁটটি সোজা থাকে। কিন্তু হঠাৎ পাতা স্পর্শ করলে ‘অ্যাসিটাইর কোলিন’ জাতীয় একধরনের রাসায়নিক পদার্থের মাধ্যমে একটা তড়িৎ প্রবাহ সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
এই রাসায়নিক পদার্থটি খুব দ্রুত এক কোষ থেকে অন্য কোষে যেতে পারে। যার প্রভাবে পাতার গোড়ার ফোলা কোষগুলো থেকে খনিজ লবণ হঠাৎই বাইরে বেরিয়ে আসে। সেসঙ্গে ফোলা কোষ থেকে পানি বেরিয়ে চলে যায় পেছনের দিককার কোষে। ফলাফলস্বরূপ ফোলা কোষগুলো চুপসে যায়।
আর কোষ চুপসে গেলেই তাদের চাপ কমে গিয়ে পাতার ডাঁটাটি আর সোজা থাকতে না পেরে নুয়ে পড়ে। পুরো ব্যাপারটি ঘটে চোখের পলকে আর তাইতো আমরা ছুঁয়ে দিলেই নুয়ে পড়ে লজ্জাবতী।